ব্যবহার করা হয় শুধু সংষ্কৃত ভাষা, ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রেখেছে ভারতের এই গ্রাম

ChatGPT Image Jun 28 2025 05 11 42 PM

সংষ্কৃত, একাধিক ভাষার জন্ম এই সংষ্কৃত ভাষা থেকে হলেও জীবনের চলার পথে এই ভাষার কতটা কাজে লাগে আমাদের? স্কুলে সংষ্কৃত আবশ্যিক ভাষা না থাকলে অনেকেই পড়তেন না। অনেকে আবার সংষ্কৃত ভাষায় অনার্স নিয়ে পড়াশোনাও করেন না।

দেশের সবচেয়ে আদি ভাষা কী কাজে লাগে সেটা লাখ টাকার প্রশ্ন। খাতায় কলমের বাইরে এর ব্যবহার সরকারি বা বেসরকারি কোনও স্তরেই নেই। আপনি কি জানেন, ভারতের একটা গ্রাম আছে যেটা সংষ্কৃত গ্রাম নামে পরিচিত, যেখানে জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ সবকিছুই হয় সংষ্কৃতে।

জেনে নিন সেটির ব্যাপারে-

ভারতের এক আশ্চর্য সংস্কৃত গ্রাম

ভারতের মধ্যে এমনও গ্রাম আছে, যেখানে প্রতিদিনের কথাবার্তাই হয় সংস্কৃত ভাষায়। কথা বলছি কর্ণাটকের শিবমোগ্গা জেলার মাত্তুর গ্রামের। এই গ্রামটিকে সবাই ‘সংস্কৃত গ্রাম’ নামে চেনেন।

সংস্কৃতই যোগাযোগের ভাষা

মাত্তুর গ্রামের প্রায় সব মানুষই দৈনন্দিন জীবনে সংস্কৃত ভাষা ব্যবহার করেন। দোকান, মাঠ, স্কুল, মন্দির বা আড্ডাখানা — সবখানেই সংস্কৃত শব্দ শোনা যায়। বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুরাও অবলীলায় সংস্কৃত কথা বলে।

কীভাবে হলো এই পরিবর্তন?

এই গ্রামের মানুষরা প্রায় ৪০০ বছর ধরে সংস্কৃত চর্চা করে আসছেন। ১৯৮১ সালে শঙ্করাচার্য স্বামী গঙ্গাধরেন্দ্র সরস্বতীর অনুপ্রেরণায় পুরো গ্রাম একজোট হয়ে সংস্কৃতকে দৈনন্দিন ভাষা হিসেবে গ্রহণ করে।

প্রতিটা প্রজন্ম এই সংষ্কৃত চর্চা তার পরের প্রজন্মে ছড়িয়ে দিয়েছে।

মাত্তুর পৌঁছাবেন কীভাবে?

মাত্তুর গ্রামটি কর্ণাটকের শিবমোগ্গা জেলার অন্তর্গত।

  • প্রথমে আপনাকে বেঙ্গালুরু বিমানবন্দরে পৌঁছাতে হবে।
  • সেখান থেকে শিবমোগ্গা পর্যন্ত ট্রেন বা বাসে যেতে হবে।
  • শিবমোগ্গা থেকে মাত্তুর গ্রামের দূরত্ব প্রায় ৮ কিলোমিটার।
  • অটো বা লোকাল ট্যাক্সি করেই সহজে গ্রামে পৌঁছানো যায়।

সংষ্কৃত চর্চা করে চাকরি মেলে?

সংস্কৃত চর্চার কারণে এখানে শিক্ষাক্ষেত্রে ভালো সুযোগ আছে। গ্রামের স্কুল ও কলেজে সংস্কৃত শিক্ষক হিসেবে কাজের সুযোগ মেলে। এছাড়া অনেকে সংস্কৃত ভাষার অনুবাদক ও গবেষক হিসেবেও কাজ করছেন।

পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান

মাত্তুর গ্রামে গেলে পর্যটকরা দেখবেন, গ্রামের দেওয়ালে সংস্কৃত শ্লোক লেখা। মন্দিরে ভক্তি সঙ্গীত, স্থানীয় স্কুলে সংস্কৃত নাটক — সবই চমকপ্রদ। পর্যটকরা স্থানীয় পরিবারের সঙ্গে থেকে সংস্কৃত শেখার সুযোগও পান।

মাত্তুর গ্রামের মানুষরা প্রমাণ করেছেন, প্রাচীন ভাষা কেবল বইপত্রে নয়, মানুষের মুখের ভাষা হয়েও টিকে থাকতে পারে। তাঁরা নতুন প্রজন্মকে নিয়মিত এই ভাষায় দক্ষ করে তুলছেন।

ভারতের এই ‘সংস্কৃত গ্রাম’ সকলের জন্য অনুপ্রেরণা। যদি সংস্কৃত ভাষা ও সংস্কৃতি আপনার পছন্দ হয়, একবার অবশ্যই মাত্তুর গ্রামে ঘুরে আসুন। হয়তো আপনারও সংস্কৃত চর্চায় আগ্রহ জন্মাবে!



Discover more from Unknown Story

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Leave a Reply