এককালে পাঁচদিন ধরে চলা ক্রিকেটকে সরিয়ে এখন জায়গা করে নিয়েছে ১০০ বলের ক্রিকেট। ইংল্যান্ডে যা প্রচলিত দ্য হান্ড্রেড নামে। প্রতি মুহূর্তে বদল হওয়া ক্রিকেটের জন্ম হয়েছিল সাদা চামড়াদের দেশ ইংল্যান্ডেই। আর ক্রিকেটের ফর্ম্যাটে শেষ বদলটাও হলো এই ইংল্যান্ডেই। সময় যত এগিয়েছে ততই বদল এসেছে ক্রিকেটে। চিঠি পাঠানোর যুগ থেকে এখন হোয়াটসঅ্যাপের যুগ। সেটার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তাই বদল এসেছে এই ক্রিকেটেও। বদল না আসলে অবাক হতে হতো। কী কী বদল এসেছে ক্রিকেট? দেখে নিন
ক্রিকেটের পরিবর্তনের শুরু
একসময় টেস্ট ম্যাচই ছিল ক্রিকেটের একমাত্র ফর্ম্যাট। দিনে দিনে সময় ও দর্শকের আগ্রহ অনুযায়ী খেলার ধরণে এসেছে পরিবর্তন। সেইরকমই সাদা জার্সিতেও লেগেছে রং। ঠিক সাদা কালো টিভি থেকে কালার টিভিতে পরিবর্তনের মতো। ওয়ানডে থেকে শুরু করে এখন টি-২০ এবং ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগ পর্যন্ত, ক্রিকেট এখন শুধু খেলা নয়, একটি বিনোদনের বড় মাধ্যম। আরও ভালো করে বলতে গেলে ব্যবসা করার জন্য হট টপিক। প্রযুক্তি, নতুন নিয়ম, ফিটনেস ও গ্লোবালাইজেশনের কারণে ক্রিকেট আগের তুলনায় অনেক দ্রুতগতির ও দর্শকনির্ভর হয়ে উঠেছে।
ক্রিকেট ফর্ম্যাটের বিবর্তন
টেস্ট থেকে টি-২০
আগে যেখানে খেলা চলত পাঁচ দিন, এখন টি-২০ ম্যাচে ফল আসে তিন ঘণ্টার মধ্যেই
ওয়ানডে-র রঙিন জার্সি ও ফ্লাডলাইট
১৯৭০ দশকের পর রঙিন পোশাক ও রাতে খেলার প্রচলন বাড়িয়েছে জনপ্রিয়তা। এই রাতে খেলার চল হয় দর্শকদের কথা ভেবেই। দিনে খেলা হলে যারা চাকরি বা ব্যবসা করতেন তাঁদের পক্ষে মাঠে যাওয়া সম্ভব হতো না, তাই রাতে খেলা চালু করা হয়। উইকএন্ডে খেলা রাখার অন্যতম কারণও এটা।
ফ্র্যাঞ্চাইজ়ি লিগ
আইপিএল, বিপিএল, বিগ ব্যাশ – নতুন প্রজন্মের কাছে ক্রিকেট মানেই এখন এই রঙিন লিগগুলো। এখানে ক্রিকেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রয়েছে বিনোদন। তাই ক্রিকেটারদেরও নিজেদের ক্রিকেট স্কিলের পাশাপাশি অভিনয় স্কিল ঝালিয়ে নিতে হয়।
ক্রিকেটের প্রযুক্তিতে বদল
ডিআরএস (DRS): আম্পায়ারের ভুল কমাতে Decision Review System একটি বড় ভূমিকা নিয়েছে। এটা প্রযুক্তির একটা বড় উদাহরণ।
স্পাইডার ক্যাম ও গ্রাফিক্স: সম্প্রচারে ব্যবহৃত অত্যাধুনিক ক্যামেরা ও গ্রাফিক্স দর্শকদের অভিজ্ঞতা অনেক উন্নত করেছে। পাশাপাশি যারা টিভিতে খেলা দেখছেন, তাঁদের কাছে বিষয়টা আরও রিয়ালিস্টিক হয়ে উপস্থাপিত হচ্ছে।
খেলোয়াড়দের ফিটনেস ও ট্রেনিং
আগের মতো শুধু ব্যাটিং-বোলিং নয়, এখন খেলোয়াড়দের ফিটনেস, ডায়েট ও মেন্টাল হেলথে জোর দেওয়া হয়। কারণ একজন প্লেয়ার এখন ক্রিকেটের পাশে আরও একাধিক কাজ করেন। প্রত্যেকেই বিজ্ঞাপনে অভিনয় করেন। তাই লুকসটাও ম্যাটার করে। অনেকে তো কম চুল লুকোতে পরচুলাও ব্যবহার করেন।
দর্শকদের ভূমিকা ও গ্লোবালাইজেশন
সোশ্যাল মিডিয়া ও ইউটিউবের কারণে নতুন প্রজন্ম আরও বেশি যুক্ত হচ্ছে খেলাটির সঙ্গে। রেডিয়োতে আগে খেলা শোনা যেত, খবরের কাগজে পড়া যেত। এখন শোনা, পড়া ও দেখার পাশাপাশি বিশ্লেষণ ও বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে দেখা পার্থক্য তৈরি করছে।
ক্রিকেট এখন আর শুধু জেন্টলম্যান’স গেম নয়, বরং একটি আধুনিক, গতিময়, ও বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় স্পোর্টস হয়ে উঠেছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্রিকেটের এই পরিবর্তনই এটিকে টিকে থাকতে সাহায্য করছে। তবে ক্রিকেটকে এখনও অনেক পথ পেরোতে হবে। হাতে গোনা কয়েকটা দেশ বাদে ক্রিকেটে আগ্রহ কম। এটা বাড়াতে ICC কাজ করলেও প্রথম সারিতে ক্রিকেট খেলিয়ে দেশকে আরও আনতে হবে।
Discover more from Unknown Story
Subscribe to get the latest posts sent to your email.
Leave a Reply