দরিদ্রের আকাশ খালি, ধনীদের মাথায় বিমানের সারি, এক ক্লিকেই বিশ্বের আর্থিক অবস্থা


বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে আপনি যেখানেই বসে থাকুন না কেন, এক ক্লিকে সবকিছুর ট্র্যাক করতে পারবেন। সে হাজার কিলোমিটার দূরে থাকা প্রিয় মানুষ হোক বা বিশ্বের অপরপ্রান্তে থাকা বিমান। কোন বিমান কোথায় যাচ্ছে, কোন মডেল, সবকিছুই জানা যায় একটা বা দুটো ক্লিকের মাধ্যমে। আর এটা হচ্ছে স্যাটেলাইটের সাহায্যে। কিন্তু আপনি কি জানেন, এই বিমান ট্র্যাকার দিয়ে শুধু বিমান নয়, দেখা যায় দেশের আর্থিক অবস্থাও। শুনতে কিছুটা অবাক লাগলেও এটাই সত্যিই। চলুন দেখে নেওয়া যাক-

কী ভাবে করবেন ফ্লাইট ট্র্যাক?

  • আপনার স্মার্টফোন ও ডেস্কটপে www.flightradar24.com এই সাইটটা ওপেন করলে আপনি দেখতে পাবেন আপনার সামনে বিশ্বের মানচিত্র খুলেছে।
  • সেখান থেকে আপনি যেখানকার বিমান দেখতে চান, সেই জায়গা বেছে নিয়ে জ়ুম করুন এবং দেখতে পাবেন সেই মুহূর্তে সেই নির্দিষ্ট আকাশের উপর কত বিমান উড়ছে।
  • কোনওটা আন্তর্জাতিক, আবার কোনওটা ঘরোয়া বিমান।
  • শুধু বিমান ওড়া নয়, কখন রওনা দিয়েছে বা কখনও সেটা পৌঁছবে সেটাও দেখা যায়।

ভারতের আকাশ

কী ভাবে দেখা যায় আর্থ সামাজিক অবস্থা?

  • এটাও পাওয়া যাবে flightradar24-এর ওয়েবসাইটেই। তবে এটা কোনও ফিচার নয়। আপনি নিজের সাদা চোখেই দেখতে পাবেন।
  • এর জন্য আপনি ম্যাপটা ঘুরিয়ে নিয়ে যান আফ্রিকার দিকে। আপনার সামনে ভারতের ম্যাপ থাকলে সেটাকে কিছুটা জ়ুম আউট করলেই পাবেন মধ্যপ্রাচ্য আর সেটাকে হাল্কা বাঁ দিকে সরালে পাবেন আফ্রিকা।
  •  আফ্রিকা মহাদেশের উত্তরে রয়েছে ইউরোপ।
  • এখানেই দেখতে পাবেন পার্থক্য। আফ্রিকা মহাদেশের উত্তরদিকের দেশ যেমন- আলজেরিয়া, লিবিয়া, সুদান, চাদ, মালির আকাশ দেখলে দেখতে পাবেন, সেখানে হাতেগোনা বিমান।
  • এর একটু নিচের দিকে অর্থাৎ, কেনিয়া, ইথিওপিয়া, তানজ়ানিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার আকাশ দেখলে বিমানের সংখ্যা কিছুটা বাড়বে।

কিন্তু আফ্রিকা মহাদেশের উত্তরে ইউরোপের দিকে দেখলে আপনি বিমানের সংখ্যা গুণে শেষ করতে পারবেন না। এমনিতেই ইউরোপের দেশগুলো আকার ও আয়তনে অনেক ছোট। সেখানে বিমানের সংখ্যা এতটাই বেশি যে মানচিত্রেও সেটাকে ধরানো যায় না।

ইউরোপের আকাশ (লাল সার্কেল), আফ্রিকার আকাশ (সাদা সার্কেল)

কী ভাবে বোঝা যায় আর্থ সামাজিক অবস্থা?

বিমান এখনও ধনী মানুষদের যাতায়াতের জন্য। মধ্যবিত্ত মানুষ জীবনে হাতেগোনা কয়েকবার বিমানে ওঠেন। তাদের নিচের স্তরের মানুষের কথা বাদই দিলাম। অন্যদিকে ধনী মানুষরা ট্রেনের বদলে যেকোনও কিছুতেই বেছে নেন বিমানকে। আরামদায়ক, কম সময় লাগায় সকলের পছন্দ থাকে এই বিমান। আর এখানেই মহাদেশ বা দেশের আর্থিক অবস্থা দেখা যায়।

যেমন আফ্রিকা মহাদেশের আকাশের দিকে ঠিক করে দেখলে বিমানগুলো সহজেই গোনা যাবে। অন্যদিকে ইউরোপের আকাশে সেটা সম্ভব নয়। সকলেরই জানা, আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলোর আর্থিক অবস্থা ভালো না। নাইজেরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকাকে বাদ দিয়ে, বাকি দেশগুলোয় দরিদ্রের সংখ্যা বেশি। এদের মধ্যে অধিকাংশের পেট চলে বিদেশি সাহায্যে। ফলে সেখানকার মানুষের কাছে বিমান চড়াটা বিলাসিতা।

অন্যদিকে ইউরোপে ছবিটা উল্টো। সবচেয়ে ধনী মহাদেশ। মানুষের বেতন, ওয়ার্ক লাইফ ব্যালান্স, পরিষেবা, সবকিছু উন্নত। তাই সেখানকার মানুষের খরচ করার ক্ষমতাও বেশি, তাই লাক্সারির সংখ্যাও বেশি এবং বিমানের সংখ্যাও বেশি।

অর্থাৎ, একটা দেশের আর্থিক অবস্থা বোঝার জন্য একটা বিমান ট্র্যাকিং ওয়েবসাইটই যথেষ্ট।



Discover more from Unknown Story

Subscribe to get the latest posts sent to your email.

Exit mobile version