সমৃদ্ধ নষ্কর
মানব শরীর এমন এক যন্ত্র যাকে যেমন ভাবে তৈরি করবেন ঠিক তেমন ভাবেই সে তৈরি হবে। অতি পরিচিত এই বাংলা প্রবাদটি আপনি নিশ্চয় শুনেছেন। হয়তো উপলব্ধিও করেছেন। যে -‘শরীরের নাম মহাশয়, যাহা সহায় তাহাই সয়’। কিন্তু সেটা যদি দিনের পর দিন কাচ বা দৈনন্দিন ব্যবহার্য ধাতব দ্রব্য খেয়ে হজম করার কথা হয় তাহলে ভ্রু দুটো নিশ্চয়ই একটু বেশি কুঁচকে যায়। আর অবাক হবেন না কেনো! একটু ঊনিশ-বিশ খেলেই আমাদের পেটের, ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ অবস্থা হয়। আর এটা হওয়া উচিতও, নয়তো মানুষ আজ গোটা পৃথিবী গলধঃকরণ করে ফেলতো।
কিন্তু ফ্রান্সের একজন রঙ্গমঞ্চ মনোরঞ্জনকারী মিস্টার মিশেল লোটিটো যাকে গোটা পৃথিবী ‘Mr. EAT IT ALL’ নামে চেনে। তিনি নাকি সব কিছু খেয়ে ফেলতে পারতেন। যেমন কাচ, খনিজ তেল, শপিং কার্ট, ধাতব বাসনপত্র এমনকি তাঁর জীবদ্দশায় একখানা আস্ত এরোপ্লেন!
কীভাবে সবকিছু খেয়ে নিতে পারতেন মিস্টার মিশেল লোটিটো?
ডাক্তার ও বৈজ্ঞানিকরা তাঁর শরীর পরীক্ষা করে দেখেন যে লোটিটোর পাকস্থলীর গাত্রভাগ খুব পুরু যা তাঁকে সাধারণ মানুষের থেকে দূরে ঠেলে অতিমানবীয় তকমা দেয় এবং তাঁর পাকস্থলীতে যে পাচন অম্ল তৈরি হয় সেটা খুব শক্তিশালী, যেটা যেকোনো ধাতু, কাচ, রবারকে সহ্য করতে পারে। এই জন্যই লোটিটোর শরীরে অভ্যন্তরীণ আঘাত (ইন্টারনাল ইনজুরি) বা কোনও ইনফেকশন হতো না। ওঁর নাম গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে এসেছিল most unusual diet এর জন্য। বাইসাইকেল, কাচের বোতল, শপিং কার্ট, টেলিভিশন সেট এগুলোকে গুঁড়ো করে খনিজ তেল ও জলের সঙ্গে মিশিয়ে খেয়ে ফেলতেন।

মিশেল লোটিটো
পেটে পুরেছেন প্রাইভেট জেটও
সবচেয়ে অবাক করার বিষয় ছিল ১৯৭৮ থেকে ১৯৮০ এই দুই বছরের মধ্যে একটা আস্ত প্রাইভেট জেট প্লেন, যার নাম CESSNA 150 LIGHT-কে পুরোপুরি খুলে খেয়ে ফেলেছিলেন। এর সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকরা নিয়মিত তাঁর শরীর নজরে রেখেছিলেন। ডাক্তাররা বলেছিলেন কিছু কিছু ব্যাখ্যা বিজ্ঞান এখনও দিতে পারে না। মিশেল লোটিটো এটার একটা জ্বলজ্যান্ত উদাহরণ। ২০০৭ সালে তাঁর একদম প্রাকৃতিকভাবেই মৃত্যু হয়। ডাক্তাররা বলেছিলেন তাঁর এই মৃত্যু খনিজ তেল বা অপাচ্য বস্তু খাওয়ায় জন্য হয়নি।
তবে ভুলেও আপনি আবার এগুলো করার চেষ্টা করবেন না।
Discover more from Unknown Story
Subscribe to get the latest posts sent to your email.
Leave a Reply