চারমিনারের পাশে চুরির দোকান ইজাজ় খানের। একার হাতেই সামলাচ্ছেন গ্রাহকদের। পাশাপাশি সময় পেলে ম্যারেজ কাউন্সিলরের কাজও করছেন। সবাই এসে সালাম ঠুকে যাচ্ছেন ইজাজ় খানকে।
কে এই ইজাজ় খান?
তিনি হায়দরাবাদের প্রাক্তন ডন। বর্তমানে আগাগোড়া সংসারী।
ডন বলতে আমাদের মাথায় প্রথমে আসে ক্রাইম। খুন, গুলি বন্দুক ইত্য়াদি। জেল আদালত এদের কাছে নিত্যদিনের ঘটনা। অনেকে সংশোধনাগারে থেকে বেরিয়েও ক্রাইম করে। অনেকে আবার নিজেকে সংশোধন করে নেয়। কারও কারও আবার জেলেই মৃত্যু হয়। কিন্তু যারা সংশোধন করেন নিজেদের কী করেন তাঁরা? সেরকমই একজন ইজাজ় খান।
২৫ বছর আগে এই পেশা থেকে বেরিয়ে এসেছেন তিনি। বর্তমানে তিনি ম্যারেজ কাউন্সিলর। অর্থাৎ বিয়ে ভাঙার হাত থেকে বাঁচান। পাশাপাশি ব্যবসায়ীও। চারমিনারের পাশে একটি চুরির দোকান আছে তাঁর।
কী ভাবে অন্ধকার জগত থেকে ফিরে এলেন তিনি?
পেশার তাগিদে অনেক সময় অনেককে খুন করতে হয়েছে। অনেকসময় খুনির দলেও ছিলেন। যারা খুন হয়েছিলেন তারা হয়তো অচেনা। খুনের বদলে মিলেছে টাকা। কিন্তু ধাক্কা লাগে যখন নিজের কেউ মারা যান। বা বলা ভালো তাকে যখন মারা হয়। ইজাজ় খান বলেন, “নিজের কেউ যখন মারা যায় তখন আমার অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। ৮-১০ দিন বাড়ি থেকে বেরোই না।” এই থেকেই শিক্ষা নেন তিনি।
এই অন্ধকার জগতে প্রবেশ কী করে?
তিনি জানান, কাজ ছিল না। বাড়িতে অভাব। সব মিলিয়ে এই পথের দিকে তাঁকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। চোখের সামনে ২০-২৫ টা খুন দেখেছেন। তখন পেটের টানে খুনের ভয় ছিল না। কিন্তু বিয়ের পর খুনের ভয় পেতেন। জানালেন, নিজের উপর যখন কারও দায়িত্ব এসে পড়ে তখন মৃত্যুর ভয়টা আরও প্রবলভাবে চেপে বসে।
তিনি জানান, এখন এই ক্ষেত্রে সংখ্যা ধীরে ধীরে কমছে। কারণ হিসেবে তিনি ধন্যবাদ দেন সোশাল মিডিয়াকে। এখনকার প্রজন্ম সারাদিন সোশাল মিডিয়ায় ব্যস্ত। ফলে কারও পক্ষে এই ধরনের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার সময় নেই। ফলে কমছে ক্রাইমের সংখ্য়া। এখনকার প্রজন্মের বেশিরভাগের কাছে খুন, ঝামেলার বিষয়ে আগ্রহ কম।
বর্তমানে কী করেন ?
বর্তমানে যারা এই পেশার সঙ্গে যুক্ত তাদের এখান থেকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সাহায্য করেন। তবে জানান, ডনগিরি থেকে ফেরা সহজ নয়। পাশাপাশি ম্যারেজ কাউন্সিলর হিসেবে কাজ করেন। এছাড়া চুরির দোকান চালান এককালেন হায়দরাবাদের ডন।
Discover more from Unknown Story
Subscribe to get the latest posts sent to your email.
Leave a Reply