ইরান ও ইজ়রায়েলের মধ্যে সংঘর্ষের মধ্যে একটা নাম বারবার সামনে আসছে। সেটা হরমুজ় প্রণালী। ইরান এই হরমুজ় প্রণালী নিয়ে একাধিক হুমকি দিয়েছে। যার পর নড়েচড়ে বসেছে বিশ্ব। ভারত, চিন থেকে শুরু করে আমেরিকাও কিছুটা হলেও চাপে। কেন এই একটা প্রণালী বিশ্বের দেশগুলোর ঘুম উড়িয়ে দিয়েছে? কেন ইরান এই হরমুজ়কে টার্গেট করছে? জেনে নিন বিস্তারিত
হরমুজ় প্রণালী কোথায় এবং কেন তা গুরুত্বপূর্ণ?
মধ্যপ্রাচ্যের পারস্য উপসাগর ও ওমান উপসাগরের সংযোগস্থলে অবস্থিত হরমুজ় প্রণালী (Strait of Hormuz)। অর্থাৎ, পারস্য ও ওমান উপসাগরকে যুক্ত করছে এটি। প্রায় ৯৫ কিলোমিটার চওড়া এই প্রণালীর অবস্থান বিশ্ব রাজনীতিতে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। এটি ৯৫ কিলোমিটার চওড়া হলেও কাজে লাগে ৩৩ কিলোমিটার চওড়া অংশ। বিশ্বে তেল সরবরাহের জন্য এটা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। এই পথ দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি ব্যারেল তেল বিশ্ববাজারে যায়, যার মধ্যে রয়েছে ভারতও। এটি বিশ্বের সামগ্রিক তেল সরবরাহের প্রায় ২০%। ফলে এই প্রণালীটি বিশ্বের অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই প্রণালী দিয়ে সৌদি আরব, কুয়েত, বাহরিন, ইরাক, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর তাদের অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করে থাকে। এই অঞ্চলের দেশগুলোর আয়ের সিংহভাগ আসে অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করে। যেহেতু বিশ্বে তেল রপ্তানিকারী দেশগুলো হরমুজ় প্রণালী ব্যবহার করে তাই এটি বন্ধ হয়ে গেলে তেলের দাম বেড়ে যাবে, যার প্রভাব গোটা বিশ্বের ওপর পড়বে।
কেন ইরান হরমুজ় প্রণালী নিয়ন্ত্রণ করতে চায়?
ভৌগলিক দিক থেকে ইরান একমাত্র দেশ যাদের বেশিরভাগ অংশ রয়েছে হরমুজ় প্রণালীতে। এটা ইরানের কাছে বাড়তি সুবিধা।
মূল কারণগুলো হলো
রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি: ইরান যদি প্রণালী বন্ধের হুমকি দেয়, তাহলে পশ্চিম বিশ্ব বিশেষ করে আমেরিকা ও ইউরোপের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারবে।
অর্থনৈতিক চাপ: মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে ইরান বারবার হুমকি দিয়েছে যে, তারা এই প্রণালী বন্ধ করে দিতে পারে, যার ফলে তেলের দাম হঠাৎ বেড়ে যাবে।
সামরিক আধিপত্য: ইরান প্রণালীতে সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখে পারস্য উপসাগরে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করতে চায়।
হরমুজ প্রণালী শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্যের নয়, বরং গোটা বিশ্বের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। ইরান এই প্রণালীকে নিজের রাজনৈতিক ও সামরিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে, যা ভবিষ্যতে বড় ধরনের সংকটের জন্ম দিতে পারে। বিশ্বের উচিত এই অঞ্চলকে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বমুক্ত রাখা এবং সমুদ্রপথকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের জন্য খোলা রাখা, যাতে বিশ্বের অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকে।
Discover more from Unknown Story
Subscribe to get the latest posts sent to your email.
৩০ বছরের লড়াই, ভিয়েতনাম যুদ্ধের রক্তাক্ত অধ্যায় - ৩০ বছরের লড়াই, ভিয়েতনাম যুদ্ধের রক্তাক্ত
[…] […]